কখনো কখনো কেউ হেরে গিয়েও জিতে যায়।
বহুজন তাকে হারাবার খুব চেষ্টা করেও হারাতে ব্যার্থ হয়। আবার কখনো কেউ জিতেও হেরে যায়।জিতবার খুব চেষ্টা করেও সে জিততে ব্যার্থ হয়।
আজ সুভাষ বুঝতে পারে বুকে একটু সাহস এনে থাকলে সেই দিনটাই,হয়তো আজ প্ৰিয়জনটা পাশেই থাকতো, তাই বুকে বলটা খুব প্রয়োজন।
অভয় নিজের এগোর জন্য আজ বুঝতে পারে সন্তানের স্নেহমাখা বাবা ডাকটা সে শুনতে পাচ্ছে না।স্ত্রীর হাসিমুখ নিয়ে চায়ের কাপ ধরানোটা আজ খুব মিস করে, সেইদিন গুলো আজ তার চোখে ভাসে যখন নিজের এগো বজায় রাখতে সব কাজ সে করেছে যা তার স্ত্রীকে পছন্দ নয়,দিনের পর দিন তাকে অবহেলা করেছে, এক বিছানায় শোয়া বন্ধ করে দেওয়া, তার সমস্ত ভালো খারাপ দায়িত্ব নেবো বলে সব দায়িত্ব বেমালুম ভুলে যাওয়া, নিত্যদিন তার উপর উচ্চস্বরে কথা বলা, বিরক্ত হওয়া, কথা বলাও বন্ধ করে দেওয়া। তাই আজ সে সর্বহারা। এগো মানুষকে ভালো কিছু দেয় না,অনেক কিছু জীবন থেকে হারিয়ে দেয়।
শকুন্তলার আজ 70এর কাছাকাছি বয়স আজ সেও বোঝে এখন সঙ্গী শুধু হাতের লাঠিটা,যখন একটা ছেলের বৌমা হয়ে রিনা বাড়িতে এলো প্রথম থেকেই পছন্দ ছিল না শকুন্তলার, যেমন বৌমা হবে ভাবতো তার উল্টোটাই যে ছিল কি করবে সে তাই মেনে নিতে পারতো না তার কোনো কিছুই... অতিরিক্ত টোকাটুকি করে বদলার চেষ্টাই বৌমাকে হারায় সে... সেইসময় মনে হয়েছিল তার ভালোই হয়েছে যাকগে, শান্তি পেলাম। তবে এখন তার বড়ো যত্ন, সেবার প্রয়োজন, বড়ো ক্লান্ত লাগে বেশি কাজ করতে পারে না,কেউ যদি দুইবেলা খাবারের প্লেটটা হাতে ধরিয়ে বলতো খেয়ে নিন মা, ওষুধের বাক্স থেকে কেউ যদি ওষুধ আর জলটা বের করে হাতে ধরিয়ে বলতো ওষুধটা খেতে ভুলে যাচ্ছিলেন তো.... মাথা ঘুরলে কেউ যত্ন করে তেল মালিশ করে দিতো.... আজ সে এইসব কিছু থেকে বঞ্চিত তার অতিরিক্ত কঠোর ব্যবহারের জন্য।
আজ নীলিমা ছেলের বৌমার বড়ো মুখ ঝামটা সহ্য করে,তাকে একটুও সম্মান করে না তার বৌমা,আজ তার মনে পরে একদিন এমন ব্যবহারই সে তার শাশুড়িমাকে করতো, ঠিকমত খাবারটাও দিত না সে, বড়ো কষ্টে জীবনটা বেরিয়েছে.... আজ নীলিমা বুঝছে যে যেমন কর্ম করবে তাকে তেমন ভাবেই ভোগ করতে হবে।
তৃষা এখন একাই থাকে যৌবনকালে অনেক সঙ্গীসাথী নিয়ে আনন্দে দিন কেটেছে তার স্বামীর কোনো কথা সে শোনেনি, বরাবর তাকে অবহেলা করেছে, তার অবর্তমানে বাড়িতে পরপুরুষও এসেছে সে খবর তার স্বামী দেরিতে হলেও জানতে পেরেছিলো, তাঁদের একটা কন্যাসন্তান ছিল আজ মেয়ে বড়ো হয়ে সব জানতে পারে মায়ের এমন কর্মের কথা... সব সম্মান ভালোবাসা হারিয়েছে তৃষা.... স্বামী গত হয়েছে 5-7বছর হলো... মেয়ে এখন আত্মনির্ভর... স্বামী সন্তান নিয়ে সুখে আছে.... তৃষা নিজের কর্মের ফল ভোগ করছে আজ সে বড়ো একা..... খুব একা।
আমরা আজ যা কর্ম করছি তার ফল আজ পাচ্ছি না তাই আমরা বুঝতে পারি না আমাদের ভুলটা কোথায়।
ভুল তখনি বুঝতে পারি যখন একা হয়ে পরি.... সকলকেই নিজের কর্মের ফল সবটা না হলেও অর্ধেকের কমও ভোগ করতেই হবে..... সবার আড়ালে অন্যায় করলেও প্রকৃতি সব দেখতে পায়, সে সেই অন্যায় কখনো ভোলে না।
Writer:Sagarika Mitra
No comments:
Post a Comment